Saturday, April 27, 2024

ভোলার চরফ্যাশনে ছাত্রদল সভাপতি'র অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী

 

ভোলার চরফ্যাশনে ছাত্রদল সভাপতি'র অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী 


এইচ এম হাছনাইন, ভোলা প্রতিনিধি


ভোলা জেলার নদী বেষ্টিত চরফ্যাশন উপজেলা দক্ষিণ আইচা থানা ছাত্রদলের সভাপতি'র অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন চর মানিকা ইউনিয়নবাসী। ওই ছাত্রদলের সভাপতি'র বিরুদ্ধে একাধিক অসহায় পরিবারের জমি দখল ও বিভিন্নভাবে হয়রানীর মূলক মামলা হামলা করা সহ একাধিক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে।


ওই ছাত্রদল সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আলাউদ্দিন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নের মৃত আব্দুর রশিদ খানের ছেলে এবং চর মানিকা ইউনিয়নের রাজাকার মৃত শামসুল ডাক্তারের নাতি। 


ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন,চরমানিকা ইউনিয়নের দক্ষিণ আইচা বাজার এলাকায় বিভিন্নজনের জমি লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক দখল করে বাড়ি ঘর নির্মান করে আসছেন ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন।


 এ ছাড়া এলাকার অসহায় পরিবারগুলোর সহয় সম্পত্তি দখল করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে কাগজপত্র বিহীন হয়রানী মূলক মামলা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।


দক্ষিণ আইচা এলাকার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন,আবুল কালাম আলাউদ্দিনের প্রকৃত ব্যবসা এলাকায় যদি কেউ পুরাতন ঘর ভেঙ্গে নতুন ঘর উত্তোলন অথবা বিক্রি করতে যায় তখনই ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসেন। এবং ওই পরিবারগুলো কাছ থেকে মোট অংকের চাঁদা দাবি করেন,তার কথা না শুনলে আদালতে মামলা চলমান রেখে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। 


এইভাবে সাধারণ মানুষকে বছরের পর বছর হয়রানি করে আসছেন ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন ।এবং এই বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি সহ ফৌজদারি আইনে মামলা করেন।

স্থানীয় মৃত কাশেম শিকদারের পুত্র আবু শিকদার জানান,তার বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় ছিলেন একজন মামলাবাজ তারাই ফসল ছাত্রদল সভাপতি আবুল কালাম আলাউদ্দিন আমাদের পরিবারকে নানাভাবে তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে হামলা ও মিথ্যা মামলা দেওয়া সহ আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপরে কাগজপত্র বিভিন্ন আদালতে দেওয়ানী মামলা করে রেখেছেন। এবং আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর কাজকর্ম করতে গেলে স্থানীয় থানা পুলিশের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়। 


ভুক্তভোগী আবুল কালাম জানান,দক্ষিণ আইচা থানা সংলগ্নে আমার আট শতাংশ রেকর্ডিং সম্পত্তি উক্ত সম্পত্তিতে আমি ঘর উত্তোলন করতে গেলে আলাউদ্দিনের লাঠিয়াল বাহিনীর ধারায় আমাকে ঘর উত্তোলন করতে দেয়নি।এবং বিনাকারণে আমাকেও বিভিন্নভাবে হয়রানী করা সহ আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল সহ আদালতে দেওয়ানি মামলা করে আলাউদ্দিন নিজেই ভোগদখল করতেছেন।


তার হাত থেকে বাঁচতে পারেনি স্থানীয় সাংবাদিকও স্থানীয় সাংবাদিক অভিযোগ করে বলেন,২০ দিন আগে আমার পুরাতন বসতবাড়ি ভেঙ্গে পূর্ণ নির্মাণ করতে গেলে ভূমিদস্য ছাত্রদল সভাপতি আবুল কালাম আলাউদ্দিন ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে দেওয়ানী আদালতে মামলা করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এসে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা মোতাবেক চাঁদা না দিলে তার লাঠিয়াল বাহিনী সহ স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে আমার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। আমরা এই একাধিক ধর্ষণকারী ও মামলাবাজ আলাউদ্দিন হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দক্ষিণ আইচায় আলাউদ্দিননের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মানুষ তটস্থছিল। বর্তমানেও তার বিরুদ্ধে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকা সহ দুই নারীকে একাধিক ধর্ষণের অভিযোগে মামলাও হয়েছে। 


স্থানীয় একটি সূত্র জানায়,ছাত্রদল সভাপতি আবুল কালাম আলাউদ্দিন বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে, বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তা সহ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ওসি ইউএনও,এসিল্যান্ডদেরকে ফোন দিয়ে তদবির করিয়ে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে কিছুদিন পূর্বে একটি সম্পত্তির বিষয় নিয়ে চরফ্যাশন যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ নাহিদুজ্জামান দক্ষিণ আইচা থানার ওসিকে আলাউদ্দিনের পক্ষে ফোন দেন। পরবর্তী সময়ে এক ভুক্তভোগী যুগ্ম জজের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন । 

ছাত্রদল সভাপতি আবুল কালাম আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে উল্লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


সূত্র আরো জানায়,ভূমিদস্যু ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আইচা থানায় কোন অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা থানা পুলিশ।


এই ব্যাপারে দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাঈদ আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: